Menu |||

সাংবাদিক রোজিনার জামিন শুনানিতে যা বললেন আইনজীবী

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটক হওয়া সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন পাওয়াটা তাঁর প্রতি কোনো দয়া, অনুগ্রহ, অনুকম্পা নয়। বরং জামিন পাওয়াটা তাঁর মৌলিক অধিকার। আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানিকালে তাঁর আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী এ কথা বলেছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভার্চ্যুয়ালি এ শুনানি হয়।

 

আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন প্রথম আলো নিয়োজিত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। তিনি আদালতকে বলেন, রোজিনা ইসলামের মামলাটি জামিনযোগ্য। জামিনের বিষয়ে যুক্তিও তুলে ধরেছেন তিনি।

আদালতের কাছে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ধারা ১২ উপস্থাপন করেছেন জানিয়ে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই আইনের সেকশন ১২-তে বলা আছে, যদি সেকশন ৩ ছাড়া অন্য কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলেও সে ক্ষেত্রে বলা আছে, তা আমলযোগ্য এবং জামিনযোগ্য।’

এহসানুল হক সমাজী বলেন, দণ্ডবিধির ৪৯৬ ধারা অনুযায়ী, জামিন পাওয়াটা তাঁর প্রতি কোনো দয়া, অনুগ্রহ, অনুকম্পা নয়। বরং জামিন পাওয়াটা হচ্ছে তাঁর মৌলিক অধিকার।

 

এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘জামিন পাওয়াটা হচ্ছে তাঁর আইনত অধিকার। শব্দটি এসেছে, শি ডিজার্ভস টু বি রিলিজড অন বেইল। সুতরাং এ ক্ষেত্রে তিনি জামিন পাওয়ার অগ্রাধিকার রাখেন। আমি আরও বলেছি, যেহেতু তিনি নারী এবং অসুস্থ, সুতরাং ধারা ৪৯৭, উপধারা ১-এর বিধান অনুযায়ী, তিনি একজন প্রিভিলেজড পারসন (বিশেষ সুবিধা বা অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি)। যেহেতু অফেন্সটা জামিনযোগ্য এবং সর্বোপরি জামিন পাওয়ার জন্য তিনি এই বিজ্ঞ আদালতের বিবেচনা পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন, সুতরাং তাঁর বিষয়টা জামিন মঞ্জুর করা হোক।’

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় পরিচিত মুখ রোজিনা ইসলাম গত সোমবার সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁকে একটি কক্ষে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় এনে তাঁর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় মামলা করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার রোজিনা ইসলামের রিমান্ড আবেদন নাকচ করে তাঁকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠান আদালত।

 

 

রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক, শিক্ষক, লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সব পেশার মানুষ। জাতিসংঘও রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ জানিয়ে অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন বিষয়ে শুনানি হয়। জামিন নিয়ে আদেশের জন্য রোববার দিন রেখেছেন আদালত।

শুনানিতে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী আদালতকে বলেন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারার কোনো উপাদান এই মামলার এজাহারে উল্লেখ নেই। ৩৭৯ ও ৪১১ ধারার উপাদান আনতে গেলে কী কী ডকুমেন্টস ও পণ্য তিনি ‘চুরি’ করেছেন, তার বর্ণনা থাকতে হবে। সেই বর্ণনা এজাহারের কোথাও নেই।

তা ছাড়া জব্দতালিকার বর্ণনা অনুযায়ী, জব্দকৃত জিনিস রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে সরাসরি নেওয়া হয়নি, বরং একজন সরকারি কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করেছেন। সুতরাং সেগুলো আদৌ রোজিনা ইসলামের দেহ তল্লাশি করে কি না কিংবা তিনি কোনো ‘চুরি’ করেছেন কি না এবং এরপর উদ্ধার হয়েছে কি না, তা একটি আইনগত প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়।

রোজিনার আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তির কথা বলা আছে। কিন্তু রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির কোনো অভিযোগ এজাহারের বর্ণনায় নেই।

এ ছাড়া একই আইনের ধারা ৫-এর কথা উল্লেখ করে এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘সেকশন (ধারা) ৫ কোট (উদ্ধৃত) করে বলেছি, সেখানে আছে রংফুল কমিউনিকেশন উইথ আদার এনিমি, অর্থাৎ এমন কোনো ডকুমেন্টস আমি দেব, যে ডকুমেন্টস বাংলাদেশের নিরাপত্তার স্বার্থের পরিপন্থী, এমন কাউকে আমি কমিউনিকেট (যোগাযোগ) করব—এ–জাতীয় কোনো অভিযোগ এজাহারের গর্ভে নাই।’

 

 

আদালতকে এহসানুল হক সমাজী বলেন, রোজিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন’। করোনাভাইরাসের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্নীতির খবর প্রকাশ করতে গিয়ে রোজিনা ইসলাম ‘পরিস্থিতির শিকার’।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে ‘ঘসেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা করেছেন’, তাঁর এই কথার প্রতিবাদ কেন করা হয়নি—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর যে শব্দ বলেছেন, আমি মনে করি একজন আইনজীবী হিসেবে, একজন কোর্ট অফিসার, পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে এই শব্দ উচ্চারণ করা ঠিক হয়নি। আমাদের শুনানিকালে নীতি হচ্ছে, ওই সময়ে বাধা দেওয়া আইনত সমীচীন না। পরে আমি বলেছি, তিনি যা বলেছেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। তিনি আইনের কোনো রেফারেন্স দেননি।’

 

 

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোজিনা ইসলামের সঙ্গে সচিবালয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পুলিশের কথাবার্তার ভিডিওর একটি অংশ ভাইরাল হয়। সেটিকে নজরে এনে বলা হয়, রোজিনা ইসলাম ‘দোষ স্বীকার’ করেছেন। যদিও পরে প্রায় সাত মিনিটের আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা করা হচ্ছে। শুনানিতে এ বিষয় নিয়েও কথা হয়।

এ প্রসঙ্গে রোজিনার আইনজীবী বলেন, ‘আমি আদালতকে বলেছি, এ মুহূর্তে কোনো ইমপোর্টেড (আমদানিকৃত) তথ্যের ওপরে জামিন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করার কোনো সুযোগ নেই। বিজ্ঞ আদালত শুধু বিবেচনা করবেন এজাহার, জব্দতালিকা, পুলিশি প্রতিবেদন। আমি আরও বলেছি, কথিত মতে যে স্বীকারোক্তি, আপনি জানেন এভিডেন্স অ্যাক্টের (সাক্ষ্য আইন) সেকশন ২৪ এবং ২৫-এর বিধান অনুযায়ী, এমনকি কোনো পুলিশ অফিসারের কাছে কোনো স্বীকারোক্তি আইনত গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং এগুলো তর্কিত, সৃজিত এবং জামিন যাতে না হয়, সেটাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য একটা দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ।’

 

 

 

সূত্র, প্রথম আলো

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

» বাকু থেকে ফিরলেন ড. মুহাম্মাদ ইউনূস

» শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

সাংবাদিক রোজিনার জামিন শুনানিতে যা বললেন আইনজীবী

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটক হওয়া সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন পাওয়াটা তাঁর প্রতি কোনো দয়া, অনুগ্রহ, অনুকম্পা নয়। বরং জামিন পাওয়াটা তাঁর মৌলিক অধিকার। আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানিকালে তাঁর আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী এ কথা বলেছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভার্চ্যুয়ালি এ শুনানি হয়।

 

আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন প্রথম আলো নিয়োজিত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। তিনি আদালতকে বলেন, রোজিনা ইসলামের মামলাটি জামিনযোগ্য। জামিনের বিষয়ে যুক্তিও তুলে ধরেছেন তিনি।

আদালতের কাছে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ধারা ১২ উপস্থাপন করেছেন জানিয়ে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই আইনের সেকশন ১২-তে বলা আছে, যদি সেকশন ৩ ছাড়া অন্য কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলেও সে ক্ষেত্রে বলা আছে, তা আমলযোগ্য এবং জামিনযোগ্য।’

এহসানুল হক সমাজী বলেন, দণ্ডবিধির ৪৯৬ ধারা অনুযায়ী, জামিন পাওয়াটা তাঁর প্রতি কোনো দয়া, অনুগ্রহ, অনুকম্পা নয়। বরং জামিন পাওয়াটা হচ্ছে তাঁর মৌলিক অধিকার।

 

এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘জামিন পাওয়াটা হচ্ছে তাঁর আইনত অধিকার। শব্দটি এসেছে, শি ডিজার্ভস টু বি রিলিজড অন বেইল। সুতরাং এ ক্ষেত্রে তিনি জামিন পাওয়ার অগ্রাধিকার রাখেন। আমি আরও বলেছি, যেহেতু তিনি নারী এবং অসুস্থ, সুতরাং ধারা ৪৯৭, উপধারা ১-এর বিধান অনুযায়ী, তিনি একজন প্রিভিলেজড পারসন (বিশেষ সুবিধা বা অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি)। যেহেতু অফেন্সটা জামিনযোগ্য এবং সর্বোপরি জামিন পাওয়ার জন্য তিনি এই বিজ্ঞ আদালতের বিবেচনা পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন, সুতরাং তাঁর বিষয়টা জামিন মঞ্জুর করা হোক।’

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় পরিচিত মুখ রোজিনা ইসলাম গত সোমবার সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁকে একটি কক্ষে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় এনে তাঁর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় মামলা করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার রোজিনা ইসলামের রিমান্ড আবেদন নাকচ করে তাঁকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠান আদালত।

 

 

রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক, শিক্ষক, লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সব পেশার মানুষ। জাতিসংঘও রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ জানিয়ে অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন বিষয়ে শুনানি হয়। জামিন নিয়ে আদেশের জন্য রোববার দিন রেখেছেন আদালত।

শুনানিতে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী আদালতকে বলেন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারার কোনো উপাদান এই মামলার এজাহারে উল্লেখ নেই। ৩৭৯ ও ৪১১ ধারার উপাদান আনতে গেলে কী কী ডকুমেন্টস ও পণ্য তিনি ‘চুরি’ করেছেন, তার বর্ণনা থাকতে হবে। সেই বর্ণনা এজাহারের কোথাও নেই।

তা ছাড়া জব্দতালিকার বর্ণনা অনুযায়ী, জব্দকৃত জিনিস রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে সরাসরি নেওয়া হয়নি, বরং একজন সরকারি কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করেছেন। সুতরাং সেগুলো আদৌ রোজিনা ইসলামের দেহ তল্লাশি করে কি না কিংবা তিনি কোনো ‘চুরি’ করেছেন কি না এবং এরপর উদ্ধার হয়েছে কি না, তা একটি আইনগত প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়।

রোজিনার আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তির কথা বলা আছে। কিন্তু রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির কোনো অভিযোগ এজাহারের বর্ণনায় নেই।

এ ছাড়া একই আইনের ধারা ৫-এর কথা উল্লেখ করে এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘সেকশন (ধারা) ৫ কোট (উদ্ধৃত) করে বলেছি, সেখানে আছে রংফুল কমিউনিকেশন উইথ আদার এনিমি, অর্থাৎ এমন কোনো ডকুমেন্টস আমি দেব, যে ডকুমেন্টস বাংলাদেশের নিরাপত্তার স্বার্থের পরিপন্থী, এমন কাউকে আমি কমিউনিকেট (যোগাযোগ) করব—এ–জাতীয় কোনো অভিযোগ এজাহারের গর্ভে নাই।’

 

 

আদালতকে এহসানুল হক সমাজী বলেন, রোজিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন’। করোনাভাইরাসের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্নীতির খবর প্রকাশ করতে গিয়ে রোজিনা ইসলাম ‘পরিস্থিতির শিকার’।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে ‘ঘসেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা করেছেন’, তাঁর এই কথার প্রতিবাদ কেন করা হয়নি—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর যে শব্দ বলেছেন, আমি মনে করি একজন আইনজীবী হিসেবে, একজন কোর্ট অফিসার, পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে এই শব্দ উচ্চারণ করা ঠিক হয়নি। আমাদের শুনানিকালে নীতি হচ্ছে, ওই সময়ে বাধা দেওয়া আইনত সমীচীন না। পরে আমি বলেছি, তিনি যা বলেছেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। তিনি আইনের কোনো রেফারেন্স দেননি।’

 

 

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোজিনা ইসলামের সঙ্গে সচিবালয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পুলিশের কথাবার্তার ভিডিওর একটি অংশ ভাইরাল হয়। সেটিকে নজরে এনে বলা হয়, রোজিনা ইসলাম ‘দোষ স্বীকার’ করেছেন। যদিও পরে প্রায় সাত মিনিটের আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা করা হচ্ছে। শুনানিতে এ বিষয় নিয়েও কথা হয়।

এ প্রসঙ্গে রোজিনার আইনজীবী বলেন, ‘আমি আদালতকে বলেছি, এ মুহূর্তে কোনো ইমপোর্টেড (আমদানিকৃত) তথ্যের ওপরে জামিন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করার কোনো সুযোগ নেই। বিজ্ঞ আদালত শুধু বিবেচনা করবেন এজাহার, জব্দতালিকা, পুলিশি প্রতিবেদন। আমি আরও বলেছি, কথিত মতে যে স্বীকারোক্তি, আপনি জানেন এভিডেন্স অ্যাক্টের (সাক্ষ্য আইন) সেকশন ২৪ এবং ২৫-এর বিধান অনুযায়ী, এমনকি কোনো পুলিশ অফিসারের কাছে কোনো স্বীকারোক্তি আইনত গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং এগুলো তর্কিত, সৃজিত এবং জামিন যাতে না হয়, সেটাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য একটা দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ।’

 

 

 

সূত্র, প্রথম আলো

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।